অনলাইনে নিরাপদ থাকার কিছু উপায়

রশ্মিকা মান্দান্না, ক্যাটরিনা কাইফের পর এখন আলিয়া ভাটের একটি ডিপফেক ভিডিও ঘুরছে অনলাইনে। যা আমাদেরকে তথ্যের অপব্যবহারের একটি সতর্কবার্তা দিচ্ছে। তাই আসুন জেনে নেই আপনার তথ্য অনলাইনে সুরক্ষিত রাখতে এখানে কিছু সহজ টিপস দেখে নেই৷

Deep Fake বিষয়টি আবারও লক্ষ লক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের জন্য গোপনীয়তা এবং সুরক্ষা উদ্বেগকে সামনে নিয়ে এসেছে। এই ধরনের AI-চালিত ভিডিওর উত্থানের পর থেকে প্রতিনিয়ত নিরাপত্তা ঝুকি তৈরী করে যাচ্চে। এখানে সেলিব্রেটিরা নয়, যেকারো তথ্যের অপব্যবহার হতে পারে। তাই ঝুকি কমাতে অনলাইনে নিরাপদ থাকার কিছু উপায় জেনে নিন।

আপনি অনলাইনে কী শেয়ার করেন তার উপর সতর্ক নজর রাখুন

নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে, সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্যান্য পাবলিক প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা ব্যক্তিগত ভিডিও এবং ছবির পরিমাণ সীমিত করার পরামর্শ দিব। যদি ছবি শেয়ার করা একেবারেই প্রয়োজনীয় হয়, তাহলে মিডিয়াকে ব্যক্তিগত রাখতে সর্বোচ্চ প্রাইভেসি সেটিংস ব্যবহার করুন। এর কারণ হল ডিপফেক টুলগুলি আপনার ব্যক্তিগত সাম্প্রতিক ডেটা সংগ্রহ করে। সেক্ষেত্রে আপনার ডেটা গোপন না রাখলে এই ধরনের আক্রমণের শিকার হতেও পারেন।

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন

সবচেয়ে মৌলিক, তবুও প্রায় সব পরিস্থিতিতেই সেরা সমাধান। হ্যাঁ, আপনার সমস্ত অনলাইন অ্যাকাউন্টের একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড আপনার ছবি এবং ভিডিওগুলিতে অননুমোদিত অ্যাক্সেস ব্লক করতে পারে। একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড করা ছাড়াও, আমরা কিছুদিন পরপর পাসওয়ার্ড আপডেট করার পরামর্শ দিই।

অ্যান্টিভাইরাস সফ্টওয়্যার ব্যবহার করুন

এটি আপনার ডেটা এবং অনলাইন অ্যাকাউন্টগুলিকে সুরক্ষিত রাখার সবচেয়ে বিশ্বস্ত উপায়গুলির মধ্যে একটি৷ ম্যালওয়্যার আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য আপনার ডিভাইসে বিশ্বস্থ অ্যান্টিভাইরাস সফ্টওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন। সাইবার অপরাধীরা ডেটা সংগ্রহ করতে ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে যা পরে ডিপফেক ভিডিও তৈরিতেও কাজে লাগায়।

আরো পড়ুন: সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে

ডিজিটাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ওয়াটারমার্ক ব্যবহার করুন

ছবি এবং ভিডিওর ক্ষেত্রে, ডিজিটাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ওয়াটারমার্ক ব্যবহার করা আপনার তথ্যকে সুরক্ষিত করার একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে। এই পদ্ধতিটি চুরি থেকে রক্ষা করার জন্য ব্যবহার করা হয়। কারণ এটি ব্যবহারকারীদের অবগত করে যে এই ডকুমেন্টের আসল মালিক কে।

মেটাডেটা ম্যানেজমেন্ট করুন

আপনার তথ্য নিরাপদ রাখার আরেকটি দুর্দান্ত উপায় হল যে তথ্যগুলিতে এম্বেড করা মেটাডেটা সঠিক এবং আপ-টু-ডেট। এর মধ্যে তৈরির তারিখ, অবস্থান এবং কপিরাইট মালিকানার বিবরণের মতো তথ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই বিবরণ মালিকানা প্রমাণ করতে কাজে আসতে পারে।

সচেতনতা এবং শিক্ষা গ্রহণ করুন

ডিপফেকের হুমকির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রথম পদক্ষেপ হল নিজেকে এবং আশেপাশের অন্যদের শিক্ষিত করা। এটি কীভাবে তৈরি করা হয় এবং এটি যে চ্যালেঞ্জগুলি তৈরি করতে পারে সে সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেয়া।

অনলাইন অ্যাকাউন্টগুলি নিরাপদ রাখুন

নিশ্চিত করুন যে আপনি আপনার সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলিতে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করেছেন৷ এটি নিশ্চিত করতে পারে যে আপনার অ্যাকাউন্ট যেকোনো ধরনের অননুমোদিত ব্যবহার থেকে নিরাপদ আছে।

আরো পড়ুন: কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এর এক ঝলক

ডিপফেক বোঝার উপায়

তথ্যের উৎস যাচাই করুন

সেরা সাইবার নিরাপত্তা অনুশীলনের পাশাপাশি, বিষয়বস্তুুর সত্যতা যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার তথ্য ছবি বা ভিডিওর উৎস দুবার চেক করার পরামর্শ দিচ্ছি। সন্দেহ হলে, মূল বিষয়বস্তু ট্র্যাক করতে নিচের কাজগুলো করতে পারেন৷

ভিডিওতে অসামঞ্জস্যতা লক্ষ করুন

ঝাঁকুনিপূর্ণ নড়াচড়া, আলো বা ত্বকের স্থর পরিবর্তন, অদ্ভুদ ব্লিঙ্কিং বা মিটমিট করা, দুর্বল ঠোঁট সিঙ্ক এবং ডিজিটাল আর্টিফ্যাক্ট খেয়াল করুন।

মুখের বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ করুন

সবচেয়ে বড় লক্ষনিয় কিছু হতে পারে কথিত ভিডিওগুলির মুখগুলি। অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য, বিশেষ করে চোখে মনোযোগ দিন। যদি চোখ অপ্রাকৃতিক দেখায় বা মুখের নড়াচড়াগুলি কিছুটা অদ্ভুত বলে মনে হয়, তবে সম্ভবত এটি একটি ডিপফেক হতে পারে।

কিছু উল্লেখযোগ্য লক্ষণ

ত্বক এবং শরীরের অংশে অসঙ্গতি থাকতে পারে। চোখের চারপাশে ছায়া দেখা যায়, সানগ্লাসে ঝলক দেখা যায়, অস্বাভাবিক মিটমিট করে, মুখের অবাস্তব নড়াচড়া, ঠোঁটের রঙ, মুখের বেমানান চুল ইত্যাদি।

আরো পড়ুন: চ্যাটজিপিটির ভয়েস চ্যাট সুবিধা যেভাবে ব্যবহার করা যাবে

অনলাইন সেইফটি নিয়ে আমাদের ভিডিওটি দেখুন

Similar Posts

24 Comments

  1. অনলাইনের খারাপ দিক গুলো নিয়ে সবার সচেতনতাই পারে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য থেকে মুক্তি দিতে

Leave a Reply